আর কোনো দিন স্কুলে যাবে না মারিয়া! অগ্নিদগ্ধ হয়ে মর্মান্তিক মৃত্যু কাদিঁয়েছে সবাইকে
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ২:৪১ অপরাহ্ণ , ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, মঙ্গলবার , পোষ্ট করা হয়েছে 4 years আগে
এম এ করিম সরাইল নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ডেস্কঃ
মারিয়া আক্তার(৫)। সরাইল উপজেলার সদর ইউনিয়নের সৈয়দটুলা মাস্টার মিশন স্কুলের প্লে শ্রেণির ফুটফুটে ছাত্রী ও একই গ্রামের পশ্চিম পাড়ার মালয়শিয়া প্রবাসী মাহফুজ মিয়ার একমাত্র মেয়ে। আর দশটি শিক্ষার্থীর মতই দাদী হোসেনা বেগমের হাত ধরে প্রতিদিন স্কুলে যেত, সহপাঠিদের সাথে লেখা-পড়ার পাশা-পাশি খেলা-ধূলা করত। হাসত। গান গাইত। মজা করে ছড়া বলত। দাদীর আদরেই মাতৃ-স্নেহের গন্ধ খুজেঁ পেত। নিয়তির খেলায় তার সেই হাসি-মাখা মুখ হঠাৎ নিতর নিস্তব্ধ হয়ে গেল। আর কোনো দিন মারিয়া হাসবে না। সহপাঠিদের সাথে স্কুলে বসে লেখা-পড়ার পাশাপাশি খেলা করবে না। দাদীর হাত ধরে স্কুলে যেতে হবে না। মর্মান্তিক এক অগ্নি দুর্ঘটনা অকালেই কেড়ে নিয়েছে অবুঝ শিশু মারিয়ার প্রাণ। আজ মঙ্গলবার(১২ফেব্রুয়ারী) সকাল ১১টায় মারিয়ার বাড়িতে তাঁর বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা এম এ করিম, প্রধান শিক্ষক সৈয়দ শাহজাহান মিয়া, সহকারি প্রধান শিক্ষক ফরহাদ চৌধুরীসহ বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা মারিয়ার বাড়িতে গিয়ে তারঁ নিতর মর দেহ দেখে ঢুকঁরে কেদেঁ সকলেই নিরব নিঃস্তব্ধ হয়ে যান। লাশের পাশে বসা এক ভদ্র মহিলা মারিয়ার নিথর দেহের উপর থেকে কাপড় সরাতেই ফুটফুটে মারিয়ার দেহের প্রায় আশি ভাগ অগ্নি দগ্ধ অংশ দেখে শুধু আফসোস আর নীরব কান্না করা ছাড়া যেন কিছুই করার ছিল না। পাশে মায়ের স্নেহে আদর করা দাদী হোসেনা বেগমের কান্নায় যেন আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছিল। মারিয়ার স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দেখে তাঁর কান্না যেন আরো বেড়ে গিয়েছিল। আর কোনো দিন মারিয়াকে নিয়ে স্কুলে যেতে পারবে না এই বলে বুক চাপড়ে কান্না করছিল মারিয়ার দাদী। পাশাপাশি অঝোড় ধারায় কাদঁছিল অন্যান্য স্বজনরা। নীরবে সবার চোখের পানি ঝরলেও তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা ছিল না। মারিয়ার পারিবারিক সূত্র জানায়, গত ২০জানুয়ারী দুপুরে গ্যাসের চুলার আগুন অসাবধানতা বশতঃ মারিয়ার জামায় লেগে দুই পা ও হাতসহ শরীরের প্রায় আশি ভাগ পুড়ে যায়। একই দিন অগ্নি দগ্ধ মারিয়াকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে ১৮দিন চিকিৎসা শেষে গত ৪দিন আগে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। আজ মঙ্গলবার( ১২ফেব্রুয়ারী) সকালে নিজ বাড়িতে মারিয়া ইন্তেকাল করেছেন(ইন্নালিল্লাহি… রাজিউন)। বাদ যোহর সৈয়দটুলা পশ্চিম পাড়ায় জানাযা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে তাকেঁ দাফন করা হয়েছে। উল্লেখ্য পারিবারিবারিক কলহের জের ধরে মাত্র ১২দিনের শিশু মারিয়াকে রেখে তার জন্মদাতা মা তার নানার বাড়িতে চলে যায়। সেই থেকে দাদীর আশ্রয়ে মারিয়া বড় হয়েছে। তার পিতা বর্তমানে মালয়শিয়া প্রবাসী। জন্মদাতা মায়ের স্নেহ ছাড়াই দুনিয়া থেকে অকালে চলে গেলেন মারিয়া নামের ফুটফুটে সেই শিশু।
আপনার মন্তব্য লিখুন