১৩ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

EN

সরাইলে স্বাধীনতার ৪৭ বছরেও মলাইশ-শাহজাদাপুর রাস্তাটি নির্মাণ হয়নি, চরম দুর্ভোগে ৩০সহস্রাধিক জনতা, দেখার যেন কেউ নেই!!!

বার্তা সম্পাদক

প্রকাশিত: ৫:৩০ অপরাহ্ণ , ২৪ এপ্রিল ২০১৮, মঙ্গলবার , পোষ্ট করা হয়েছে 7 years আগে

 

এম এ করিম সরাইল নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ডেস্ক:
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার শাহজাদাপুর ইউনিয়নে অবস্থিত মলাইশ-শাহজাদাপুর রাস্তাটি স্বাধীনতার ৪৭বছর পরেও নির্মাণ হয়নি। এতে করে রাস্তাটি দিয়ে জীবিকার তাগিদে প্রতিনিয়ত চলমান মলাইশ, শাহজাদাপুর, নেয়ামতপুর ও দাওরিয়া গ্রামসহ আশ-পাশের এলাকার প্রায় ৩০সহস্রাধিক মানুষের দুর্ভোগ এখন নিত্যদিনের সঙ্গী। সরাইল উপজেলা সদর থেকে শাহজাদাপুর ইউনিয়নের মলাইশ গ্রামের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত প্রায় ৭কিলোমিটার পাকা রাস্তা থাকলেও মাত্র দুই কিলোমিটার পাকা রাস্তার অভাবে সরাইল উপজেলা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আছেন শাহজাদাপুর, নেয়ামতপুর ও দাওরিয়া গ্রামের প্রায় ৩০সহস্রাধিক মানুষ। রাস্তাটি অপেক্ষাকৃত নীচু ও কাচা রাস্তা হওয়ায় বছরের অর্ধেক সময় কর্দমাক্ত অবস্থায় সিএনজি যোগে অনেক কষ্ট করে রাস্তাটি দিয়ে এলাকার লোকজন চলাচল করেন। বর্ষাকালে পানিতে তলিয়ে যায় রাস্তাটি। উপজেলা, জেলা, তথা সারাদেশের সাথে শাহজাদাপুর, নেয়ামতপুর, দাওরিয়া গ্রামের জনগণের যোগাযোগের একমাত্র রাস্তাটি যুগ যুগ ধরে বেহাল দশায় থাকার কারনে যোগাযোগের ক্ষেত্রে সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছেন অত্র এলাকার সাধারণ জনগন। শাহজাদাপুর গ্রামর বাসিন্দা মো: আল মামুন খান ক্ষোভ ও আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, স্বাধীন সার্বভৌম এদেশের মাটি ও মানুষ অবিচ্ছিন্ন। মাত্র দুই কিলোমিটার পাকা রাস্তার জন্য স্বাধীনতার ৪৭বছর পরেও আমরা কেন বিচ্ছিন্ন থাকব। আধুনিক যোগাযোগের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হব। সারা দেশে যোগাযোগ খাতে ব্যাপক উন্নয়ন হলেও আমাদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না কেন? স্থানীয় ও জাতীয় সকল পর্যায়ের নির্বাচনে ভোট নেওয়ার সময় আমাদের ৩টি বিচ্ছিন্ন গ্রামের ৩০সহস্রাধিক মানুষের খুবই মূল্যায়ন হয়। কিন্তু নির্বাচন চলে গেলে রাস্তাটি নির্মাণ করে আমাদের দুর্ভোগ দূরীকরনে কাউকেই আর খুঁজে পাওয়া যায় না। রাস্তাটির এই সমস্যা যেন দেখার কেউ নেই। শাহজাদাপুর গ্রামে গড়ে উঠেছে একটি হাইস্কুল, একটি বাজার, স্বাস্থ্য ক্লিনিক, বিভিন্ন প্রাইমারী ও কিন্ডার গার্টেন স্কুল। রাস্তাটি দিয়ে শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন  শ্রেণি পেশার মানুষের চলাচলে খুবই কষ্ট করতে হচ্ছে। সবচেয়ে বেশী কষ্ট হচ্ছে যখন প্রসুতি মা ও মূমুর্ষূ রোগীদের নিয়ে উপজেলা সদরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে জরুরী ভিত্তিতে চিকিৎসার জন্য যাতায়াতের প্রয়োজন হয়। অনেক সময় রাস্তাটির বেহাল দশার কারনে সময়মত চিকিৎসার অভাবে মূমুর্ষূ রোগীরা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন। এছাড়া রাস্তাটির আশ-পাশের বিস্তীর্ণ ধানী জমির ফসল উঠানোর ক্ষেত্রে সমস্যা হওয়ায় ফসলের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এলাকার কৃষকরা। সার্বভৌম, স্বাধীন এ দেশের স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরে হলেও সরাইল উপজেলার বিচ্ছিন্ন তিন গ্রামের ৩০সহস্রাধিক মানুষের চলাচলের মাত্র দুই কিলোমিটার এই বেহাল ও কাচা রাস্তাটি দ্রুত পাকা রাস্তা হিসেবে নির্মাণ করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রতি দীর্ঘ দিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।  সরাইল শাহজাদাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম খোকন বলেন, রাস্তাটি নির্মাণের  জন্য ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে চেষ্টা, তদবির অব্যাহত রেখেছি। সম্প্রতি রাস্তাটিতে মাটি ফেলে সংস্কার করা হয়েছে। কিছু দিন পূর্বে সরকারের লোকজন রাস্তাটি পরিদর্শন করে গেছেন। আশা করি দ্রুত রাস্তাটি নির্মাণ করা হবে। সরাইল উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো: শের আলম মিয়া বলেন, আজ থেকে দুই বছর আগে শাহজাদাপুর গ্রামে গিয়ে রাস্তাটি নির্মাণের দাবিতে আমার নেতৃত্বে  এলাকাবাসীকে নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছি। বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্য এই রাস্তাটি নির্মাণ করা এখন সময়ের দাবি। রাস্তাটি দ্রুত নির্মাণ করতে আমি সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি। সরাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এডভোকেট মো: আব্দুর রহমান বলেন সরাইল উপজেলার পূর্বাঞ্চলের মানুষের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটি নির্মাণের জন্য উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে সরকারের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আমি জোর চেষ্টা ও তদবির চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করি দ্রুত রাস্তাটি নির্মাণ হবে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২(সরাইল-আশুগঞ্জ) নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্য এডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা বলেন, রাস্তাটি নির্মাণ করতে আমার পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নিয়েছি।  রাস্তাটি নির্মাণের জন্য সরকারী অনুমোদন প্রক্রিয়া চলছে। আমার চলমান মেয়াদকালেই রাস্তাটি নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করতে পারব বলে আমি আশাবাদী।

আপনার মন্তব্য লিখুন

আর্কাইভ

July 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031  
আরও পড়ুন