সরাইলে সিএনজি চুরির অপবাদে গ্রাম্য কাইজ্জায় চির বিদায় নিলেন জসিম উদ্দিন
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ১১:৪১ অপরাহ্ণ , ১০ এপ্রিল ২০২৫, বৃহস্পতিবার , পোষ্ট করা হয়েছে 1 month আগে
সরাইলে সিএনজি চুরির অপবাদে গ্রাম্য কাইজ্জায় চির বিদায় নিলেন জসিম উদ্দিন
এম এ করিম সরাইল(ব্রাহ্মণবাড়িতা)
সিএনজি চুরির অপবাদে দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুরুতর আহত হওয়ার ২দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে চির বিদায় নিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের তেরকান্দা গ্রামের জসিম উদ্দিন(৪৮)। সদা হাস্যোজ্জ্বল ও এলাকায় ভাল মানুষ হিসেবে পরিচিত জসিম উদ্দিনের মর্মান্তিক এ বিদায় কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না এলাকাবাসী। সিএনজি চুরি, মিথ্যা অপবাদ, দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ঘরবাড়ি ভাংচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, হতাহত এমন ধ্বংলিলায় যারা গ্রাম্য কাইজ্জায় উন্মাদের মত মেতে উঠে তারা কি পারবে জসিমকে ফিরিয়ে দিতে? পরিবারের অভিভাবককে হারিয়ে যে ক্ষতির মুখে পড়েছে জসিমের পরিবার, উন্মাদ দাঙ্গাবাজরা কি পারবে জসিমের পরিবারের সেই ক্ষতি পুষিয়ে দিতে? কখনই না। তাহলে নিশ্চিৎ না হয়ে যারা একটি সিএনজি চুরির অপবাদ অন্যদের দিয়ে একটি শান্ত গ্রামকে অশান্ত করে ধ্বংস লিলায় মেতে উঠেছে তারা কি পারবে জসিম কে ফিরিয়ে দিতে? হয়ত আইনি প্রক্রিয়ায় মামলা হবে, আসামী গ্রেফতার হবে, হাজতে যাবে, সময়ের ব্যবধানে জামিন হবে, মামলা বিচারাধীন চলমান থাকবে, গ্রাম্য মোড়লদের দয়ার উদ্রেগ হবে, শালিশ বৈঠক হবে, মাপ চাওয়াবে, জরিমানা হবে, আরও কত কি হবে কিন্তু জসিমকে আর ফিরে পাবে না তার পরিবার। মানুষ মরণশীল তবে তুচ্ছ ঘটনায় গ্রাম্য কাইজ্জায় জুলুমের শিকার হয়ে এভাবে জসিমের মত নিহত হয়ে না ফেরার দেশে চলে যাওয়ার বেদনা কেবল যে পরিবার স্বজন হারায় সেই পরিবার বুঝে।
আর কোনো জসিম যেন এভাবে মর্মান্তিক মৃত্যুবরণ করতে না হয় এই জন্য সকলকে সচেতন হতে হবে। দুই জনের গ্রাম্য ঝগড়াকে গোষ্ঠী ভিত্তিক দাঙ্গায় না জড়িয়ে তাৎক্ষনিক সমাধানের চেষ্টা করে সকলে শান্তির পথে এগিয়ে যেতে হবে। স্বাভাবিক মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত থেকে মানুষ ও দেশ মাতৃকার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখতে হবে এটাই হউক সকলের অঙ্গীকার।
উল্লেখ্য তেরকান্দা গ্রামের খালের দক্ষিণ পাড়ার চান্দের গোষ্ঠীর এক ব্যক্তির একটি সিএনজি চুরি হওয়াকে কেন্দ্র করে একই এলাকার বারিকের গোষ্ঠীর লোকজনকে সিএনজি চুরির অপবাদ দেওয়া হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে সোমবার (৭ এপ্রিল) দিবাগত রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত প্রথম দফা ও পরদিন মঙ্গলবার(৮এপ্রিল) সকাল ৫টা থেকে ৯টা পর্যন্ত দ্বিতীয় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। দফায় দফায় সংঘর্ষ চলাকালে উভয় পক্ষের ২০টি বসতঘরে ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে দাঙ্গাবাজরা।
সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ৪০জন লোক আহত হয়। আহতদের সরাইল ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। গুরুতর আহত চান্দের গোষ্ঠীর জসিম (৩৮) নামের একজনকে আশংকাজনক অবস্থায় ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২ দিন পর বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) রাত আড়াইটার দিকে ঢাকার একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। একই দিন বাদ মাগরিব স্থানীয় মাদ্রাসামাঠে জানা শেষে জসিমকে দাফন করার মাধ্যমে অশ্রুসিক্ত নয়নে চির বিদায় জানান এলাকাবাসী।
আপনার মন্তব্য লিখুন