পিতাকে চেনার আগেই এতিম হলো ৯মাসের শিশু উজাইফা, কান্না থামছে না স্বজনদের
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ৫:০১ অপরাহ্ণ , ৯ আগস্ট ২০২৪, শুক্রবার , পোষ্ট করা হয়েছে 2 months আগেপিতাকে চেনার আগেই এতিম হলো ৯মাসের শিশু উজাইফা, কান্না থামছে না স্বজনদের
এম এ করিম সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ঢাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত সরাইলের হাফেজ মাওলানা মুফতি মাহমুদুল হাসান মাহদী(২৫) এর পরিবারে কান্না থামছে না স্বজনদের। পিতাকে চেনার আগেই এতিম হলো ৯মাসের একমাত্র শিশু উজাইফা।
মাওলানা মাহদী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের ফতেহপুর গ্রামের হাফেজ আব্দুস সাত্তারের বড় পুত্র।
সোমবার (৫ আগস্ট) সন্ধায় ঢাকার উত্তরায় আন্দোলন চলাকালে পুলিশের ছোঁড়া গুলি বুকের বাম পাশে বিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুঠিয়ে পড়ে মাওলানা মাহদী। এ সময় স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টরের কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাঁকে মৃত ঘোষনা করেন।
ঢাকার বারিধারা এলাকার একটি মাদ্রাসায় হেফজ পড়া শেষ করে মালিবাগ মাদ্রাসা থেকে কিতাব ও মুফতি বিভাগে পড়ালেখা শেষ করেন মাওলানা মাহদী। পরে কাপাসিয়া চাঁদপুর মসজিদে তিনে পেশ ইমাম হিসেবে যোগদান করেন।
দুই বছর আগে ফতেহপুর গ্রামে বুশরা নামের এক মেয়ের সাথে পারিবারিকভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর গত ৯ মাস পূর্বে উজায়ফা নামের এক সন্তানের জনক হোন তিনি।
স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে আব্দুল্লাহপুরে থাকতেন হাফেজ মাহদী। মাঝে মধ্যেই স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে নিজের এলাকা সরাইলের ফতেহপুর গ্রামে পিতা-মাতা ও পরিবারের অন্যান্য স্বজনদের কাছে ছুঁটে আসতেন হাফেজ মাহদী।
মঙ্গলবার(৬ আগস্ট) সন্ধায় নিহত হাফেজ মাওলানা মুফতি মাহমুদুল হাসান মাহদীর লাশ গ্রামের বাড়িতে অ্যাম্বুলেন্সযোগে আসলে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। এ সময় স্বজনদের কান্নায় সেখানকার আকাশ বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। মাওলানা মাহদীকে এক নজর দেখতে এলাকার লোকজন ভীড় জমায়।
পরদিন বুধবার (৭ আগস্ট) বিকালে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে চির নিদ্রায় শায়িত করা হয় হাফেজ মাওলানা মুফতি মাহমুদুল হাসান মাহদীকে।
এ ব্যপারে মাহদীর পিতা হাফেজ আব্দুস সাত্তার বলেন, অনেক কষ্ট করে ছেলেকে হাফেজ মাওলানা ও মুফতি পড়িয়েছিলাম। একজন হাফেজের বুক ছিদ্র করতে তাদের হাত একটুও কাঁপলো না। পরিবারের একমাত্র ভরসা ছিল মাহদী। আমার নাতি, পুত্রবধূসহ পরিবারের এখন কি হবে? পুলিশ বা রাষ্ট্র কি আমাদের দায়িত্ব নিবে?
আপনার মন্তব্য লিখুন