সরাইলে ৪ দিন ধরে অবরুদ্ধ সহস্রাধিক পরিবার
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ৩:৩৫ অপরাহ্ণ , ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭, সোমবার , পোষ্ট করা হয়েছে 6 years আগেসরাইল নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ডেস্ক:
এক যুবককে প্রবাসে পাঠানোর লেনদেনকে কেন্দ্র করে সরাইলে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে চলছে উত্তেজনা। দেনাদারকে আটকের পর হয়েছে অপহরণ মামলা। খোকন (২৬) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। উপজেলার বড়ুইছাড়া গ্রামের শিক্ষার্থীসহ সহস্রাধিক পরিবারের সব লোকজন গত ৪ দিন ধরে অবরুদ্ধের শিকার। তাদের পার্শ্ববর্তী পরমানন্দপুর গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পথ রোধ করে বসে থাকে। আবার রাতের বেলা ও চলে দা বল্লমের মহড়া। ফলে ওই গ্রামের বাসিন্দারা চাকরি ব্যবসা বাণিজ্যসহ কোনো কাজেই বের হতে পারছে না। পুলিশ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ লোকজন জানায়, উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের বড়ুইছাড়া গ্রামের সাদাত মিয়া ৫ বছর আগে তার ছেলে এজহার (২২) কে মধ্যপ্রাচ্যে পাঠিয়ে দেয়ার শর্তে পার্শ্ববর্তী পরমানন্দপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানকে ৫ লাখ টাকা দিয়েছিল। হাবিবুর রহমান দীর্ঘদিন ধরে বিদেশে লোক পাঠানোর কাজ করে আসছে। বিদেশ নিতে না পারায় টাকা দেয়ার ২ বছর পরই সাদাত মিয়া হাবিবুরের কাছে টাকা ফেরত চায়। কিন্তু হাবিবুর দেম দিচ্ছি বলে সময় ক্ষেপণ করতে থাকে। এ ঘটনায় এলাকায় একাধিক সালিশ দরবারও হয়েছে। ৫ বছর অপেক্ষার পরও টাকা না পাওয়ায় সাদাত মিয়া খুবই ক্ষুব্ধ হন। গত ৬ই সেপ্টেম্বর সকাল ১১টার দিকে সাদাত মিয়া অরুয়াইল বাজার থেকে হাবিবুরকে ধরে নিজ গ্রাম বড়ুইছাড়া নিয়ে যান। এ খবর শুনে পরমানন্দপুর গ্রামের লোকজন ক্ষুব্ধ হয়। সরাইল থানার এসআই মো. ইসমাঈল হোসেন অপহৃত হাবিবকে বড়ুইছাড়া গ্রাম থেকে উদ্ধার করেন। পরে হাবিবুর রহমানের ছোট ভাই কবির বাদী হয়ে একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা সদরের কাউতলি এলাকা থেকে অপহরণ মামলার আসামি খোকন (২৬) কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পরমানন্দপুর গ্রামের বিভিন্ন বয়সের লোকজন বৃহস্পতিবার থেকেই বড়ুইছাড়া গ্রামের লোকজনের পথ অবরুদ্ধ করে রাখে। তাদের ভয়ে গ্রামের কোনো লোক বাড়ি থেকে বের হয়ে কোথাও যেতে পারছেন না। পরীক্ষা আসন্ন হলেও ওই গ্রামের কলেজ ও স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা বাড়িতেই বন্দি হয়ে আছে। ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. এনামুল মিয়া অবরুদ্ধের কথা স্বীকার করে বলেন, শুধু দিনের বেলাই নয়। রাতে ও আমাদের গ্রামের নারী পুরুষসহ সবাই আতঙ্কে থাকেন। কারণ পরমানন্দপুরের লোকজন নৌকায় করে রামদা বল্লম নিয়ে গ্রামের চারিদিকে মহড়ায় থাকে। গত ৪ দিন ধরে চলছে এ অবস্থা। কেউ এগিয়ে আসছে না। এমনকি পুলিশও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। অরুয়াইল আবদুস সাত্তার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, আমি মালয়েশিয়া চলে যাচ্ছি। খোঁজ খবর নিয়ে কলেজের শিক্ষার্থীদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব। অরুয়াইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শেখ সাদী বলেন, বড়ুইছাড়া গ্রামে আমাদের ৩০-৩৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। আজ (গতকাল) তাদের অবরুদ্ধের কথা শুনেছি। আগামী কাল (আজ) থেকে তাদের নৌকার ব্যবস্থা করব। তাদের বহনকারী নৌকায় কেউ হামলা করতে পারবে না। অরুয়াইল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই গোলাম মোস্তফা বলেন, পরমানন্দপুরের কিছু লোকের বাড়াবাড়ির কথা শুনেছি। তাদেরকে শাসিয়ে এসেছি। আইন নিজের হাতে তুলে নিলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
আপনার মন্তব্য লিখুন