সড়ক নয় যেন মরণফাঁদ!, সরাইল-অরুয়াইল সড়কে ভোগান্তিতে ২ লক্ষাধিক মানুষ
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ৯:৫০ পূর্বাহ্ণ , ৩০ মার্চ ২০২২, বুধবার , পোষ্ট করা হয়েছে 2 years আগে
সড়ক নয় যেন মরণফাঁদ!,
সরাইল-অরুয়াইল সড়কে ভোগান্তিতে ২ লক্ষাধিক মানুষ
এম এ করিম সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া):
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল অরুয়াইল সড়কের চুন্টা ঘাগড়া জোর থেকে ভুইশ্বর পর্যন্ত অংশ টুকু সংস্কারের অভাবে আজ মরণফাঁদে পরিনত হয়েছে। অরুয়াইল পাকশিমুল ইউনিয়নের ২ লক্ষাধিক মানুষের চলাচলের একমাত্র সড়কটি আজ হাওরে বিলীন হতে চলছে। আড়াই কিলোমিটার সড়ক একেবারে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পরেছে।
এর আগের বছর বর্ষায় পানির ঢেউয়ে সড়কটির দুইপাশ ভেঙে হাওরে বিলীন হয়ে গেছে, অনেকাংশে সড়কটি সরু হয়ে গেছে। এখন সড়কটি প্রায় যায়গায় যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পরেছে।
মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) সকাল ১১টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভুইশ্বর বাজারের দক্ষিণ পাশে একটি ট্রাকটর কিছু মালামাল সহ একেবারে উল্টে পরে আছে। চালক ও তার সহকারী কোনভাবে বেঁচে গেলেও তারা আহত হয়েছেন। এর কয়েক গজ দূরেই আর একটি পিকআপ আটকে আছে সড়কে। পিকআপ টিকে সরানোর চেষ্টা করছেন চালক সহকারী ও স্থানীয় কয়েক জন। কয়েক যায়গায় সিএনজি থেকে যাত্রীরা নেমে ধাক্কা দিয়ে সাহায্য করছেন গাড়ি চলাচলে।
অরুয়াইল যাওয়ার পথে সালাম নামের এক সিএনজি যাত্রি আক্ষেপ করে বলেন, আকাশের যে অবস্থা মনে হয় আজকে বৃষ্টি হলে বিকাল থেকে গাড়ি চলাচল একেবারে বন্ধ হয়ে যাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলছিলেন, আপনারা সংবাদ প্রচার করে কোন লাভ হচ্ছে না। কেউ কোন পদক্ষেপ নিতেছে না। আর কত দুর্ঘটনা ঘটলে, আর কতটা দুর্ঘটনার শিকার হলে মানুষ তার পরে সংস্কার করা হবে সড়কটির?
অরুয়াইল বাজারের পল্লী চিকিৎসক রাকেশ দাস বলছিলেন আজ বিকেলে তীর্থ ভ্রমণের জন্য সিলেট যামু। কেমনে যামু চিন্তা করতাছি, সিএনজি তে উঠতে ভয় করে যেই রাস্তা কোমড় ভাইঙ্গা নি যায়।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, সরাইলের উত্তরে হাওর বেষ্টিত এলাকায় ১১ বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছিল সরাইল থেকে অরুয়াইল পর্যন্ত সড়কটির । উপজেলা সদরের হাসপাতাল মোড় থেকে অরুয়াইল বাজার পর্যন্ত এ সড়কের দৈর্ঘ্য ১৪ কিলোমিটার ও প্রস্থ ১২ ফুট ছিল। ওই পাকা সড়কটি নির্মাণের ফলে উপজেলার চুন্টা, পাকশিমুল ও অরুয়াইল ইউনিয়ন এবং নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় ও কুন্ডা ইউনিয়নের ২ লক্ষাধিক মানুষের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এসেছে।
কিন্তু সড়কটি নির্মাণের পর থেকে প্রয়োজনীয় তদারকি ও সংস্কারের অভাবে বেহাল হয়ে যায়। গত বছরের জুন মাসে ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটির সাড়ে ১১ কিলোমিটার অংশের সংস্কারকাজ সম্পন্ন হয়। বাকি ছিল চুন্টা ইউনিয়নের ঘাগড়াজোর থেকে পাকশিমুল ইউনিয়নের ভূইশ্বর বাজার পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার অংশটি । এ অংশটি প্রতিবছর ভাঙনের কবলে পড়ে।
গাড়ির চালক জহিরুল ইসলাম (২৭) বলেন, সড়কটি সংস্কার না হওয়ার কারণে অনেক কষ্ট করতে হয় আমরার। গাড়ির ক্ষতি হইতাছে, পার্স ভাঙে। কি করমু পেটের দায়ে চালাইতে হয়। এখন সড়কের মধ্যে অনেক ভাঙা, বড় বড় গর্ত, ধুলাবালি। আর বৃষ্টি হলে সড়ক পিচ্ছিল হয়ে যায়,গাড়ি চালানো যায় না।
তাই বর্ষার আগে সড়কটি যেন দ্রুত সংস্কার করে সরকারের কাছে জোর দাবি জানাই।
অরুয়াইল ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া বলেন, সড়কটিতে ছোট-বড় গর্ত থাকায় প্রায় প্রতিদিনই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে এলাকাবাসী। সন্ধ্যার পর ওই সড়কে যাতায়াত করা একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়ে।
বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই দ্রুত সড়কটি সংস্কার করার দাবি জানিয়েছেন হাওড় বেষ্টিত এলাকার ভুক্তভোগী জনগণ।
আপনার মন্তব্য লিখুন