সরাইল হাসপাতালে করোনাকালীন সরকারি লক্ষ লক্ষ টাকা বরাদ্ধের ব্যয় নিয়ে সন্দেহ, সঠিক তদন্ত দাবি
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ৪:৩২ অপরাহ্ণ , ৩০ জুলাই ২০২১, শুক্রবার , পোষ্ট করা হয়েছে 2 years আগে
সরাইল হাসপাতালে করোনাকালীন সরকারি লক্ষ লক্ষ টাকা বরাদ্ধের ব্যয় নিয়ে সন্দেহ, সঠিক তদন্ত দাবি
এম এ করিম সরাইল নিউজ ২৪.কমঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনাকালীন সময়ে বিগত অর্থ বছরে হাসপাতালের বিভিন্ন খাতে সরকারি লক্ষ লক্ষ টাকা বরাদ্ধের ব্যয় নিয়ে জনগণের পক্ষ থেকে সঠিক তদন্ত দাবি করেছেন সরাইল উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী রোকেয়া বেগম।
বৃহস্পতিবার(২৯ জুলাই) রাতে নিজের ভেরিফাইড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম(ফেইসবুক) আইডিতে দেওয়া বিবৃতিতে তিনি এ দাবি করেন।
একই সাথে হাতে লেখা কাগজে সরাইল সরকারি হাসপাতালে করোনাকালীন বিগত অর্থ বছরে হাসপাতালের ৭ টি খাতে মোট ১৬ লক্ষ ৯৩ হাজার ৫শত ২০ টাকার ব্যয় বরাদ্ধ প্রকাশ করেন তিনি। এর মধ্যে আপ্যায়ন বাবদ ব্যয় ১০ লক্ষ ৩৬ হাজার ৮ শত টাকা, পরিবহন বাবদ ব্যয় ৩ লক্ষ ৬০হাজার টাকা, ভ্রমন বাবদ ব্যয় ১লক্ষ ৮ শত টাকা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী বাবদ ব্যয় ৪০ হাজার ৫ শত ৬০ টাকা, সম্মানি ভাতা ২৫ হাজার ২ শত টাকা, টিকাদান কার্যক্রমের জন্য ১লক্ষ ২হাজার ১শত ৬০ টাকা, পরিসংখ্যানবিদ ও ডাটা এন্ট্রি ২৮ হাজার টাকা উল্লেখ করা হয়েছে।
সরাইল উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রোকেয়া বেগম এর ভেরিফাইড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আইডিতে প্রকাশিত বিবৃতিটি হলো, “গত অর্থবছরের করোনাকালিন সময়ে সরকারি বরাদ্দ সরাইল সদর সরকারি হাসপাতালের এই টাকা বিভিন্ন খাতে খরচা করার জন্য সরকার দিয়েছেন কিন্তুু তা কিভাবে ব্যয় করা হয়েছে তা জনগণ জানে না। আমি অনুরোধ করব, উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সাংবাদিক ভাইয়েরা ও সুশীল সমাজের কাছে তা যাচাই করার জন্য। আমি সরাইল সরকারি হাসপাতালের স্থায়ী কমিটির সভাপতি হয়ে এই ব্যাপারে কিছু জানিনা। হাসপাতালের কোনো সভা হয় না, জনগণের পক্ষ থেকে সঠিক তদন্ত চাই।”
এ ব্যপারে সরাইল উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও হাসপাতালের স্থায়ী কমিটির সভাপতি রোকেয়া বেগম এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের ভেরিফাইড আইডিতে দেওয়া স্ট্যাটাস স্বীকার করে তিনি বলেন, করোনাকালীন সময়ে হাসপাতালের বিভিন্ন খাতে সরকারি বরাদ্ধের পত্র আমার কাছে রয়েছে। কিন্তু এই টাকা কোন খাতে কিভাবে ও কত ব্যয় করা হয়েছে তার হিসাব আমাদেরকে জানানো হয় না। কোনো সভা করা হয় না। সরকারি অর্থ ব্যয়ে সন্দেহ রয়েছে তাই জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে জনগণের পক্ষ থেকে এই অর্থ ব্যয়ের সঠিক তদন্ত দাবি করেছি।
এ ব্যপারে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর প্রধান ডাঃ নোমান মিয়ার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য আমি দেখেছি যা বাস্তবতার সাথে কোনো মিল নেই। করোনাকালীন সময়ে বিগত অর্থ বছরে বিভিন্ন খাতে সরকারি বরাদ্ধের যথাযথ ব্যবহার হয়েছে যার প্রত্যেকটি ডকুমেন্ট সংরক্ষণ আছে। কোনো প্রকার অনিয়ম করা হয়নি।
উদাহরন হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, আপ্যায়ন বাবদ ব্যয় হিসেবে ১০ লাখ টাকার কথা বলা হয়েছে এ তথ্যটি সঠিক নয়। এ খাতে ২লাখ টাকা ব্যয় করা হয়েছে বাকী ৮ লাখ টাকা সরকারী খাতে ফেরত দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাসে ২/৩ বার হাসপাতাল পরিদর্শনে আসেন। বিগত অর্থ বছরে বিভিন্ন খাতে ব্যয় নিয়ে তিনি আমার সাথে কথা বললেই এ ব্যপারে সঠিক তথ্য জানতে পারতেন। সেটা না করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ব্যপারে প্রচার করাটা অনাকাংখিত ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
তিনি আরও বলেন, করোনা ঝুঁকি মাথায় নিয়ে হাসপাতালে স্টাফরা বিরামহীনভাবে যেখানে জনগণের সেবা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন সেখানে এ ধরনের অপপ্রচারে আমাদের কাজকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে যা আদৌ কাম্য নয়।
আপনার মন্তব্য লিখুন