সরাইল বিকাল বাজার শাহী জামে মসজিদে ৩০লক্ষ টাকা ব্যয়ে মিনার নির্মাণ, মুসুল্লিদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ১২:৪৯ অপরাহ্ণ , ২১ জুন ২০১৯, শুক্রবার , পোষ্ট করা হয়েছে 4 years আগে
এম এ করিম সরাইল নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ডেস্কঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বিকাল বাজার শাহী জামে মসজিদে সম্ভাব্য ৩০লক্ষ টাকা ব্যয়ে চলছে মিনার নির্মাণ কাজ। প্রায় দুই বছর আগে এ নির্মাণ কাজের শুরু হলেও অদ্যাবদি শেষ হয়নি মিনার নির্মাণ কাজ। এদিকে মসজিদের অভ্যন্তরে উন্নয়নমূলক নানা কাজ বাকী রেখে দীর্ঘদিন ধরে মিনার নির্মাণ কাজ চলমান থাকায় এ নিয়ে মুসুল্লিদের মাঝে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। মসজিদ পরিচালনা কমিটির কার্যক্রম নিয়েও চলছে নানা কানাকষা। অনুসন্ধানে জানা যায়, এই মসজিদের আয়ের উৎস হিসেবে ৮টি দোকান ভাড়া, পুকুর ও পুকুরের পাড় জমাসহ মুসুল্লিদের দানকৃত টাকা রয়েছে। এর মধ্যে ৮হাজার টাকা ভাড়ায় একটি দোকান দীর্ঘ দিন ধরে ভাড়া নিয়ে ” ইসলামীয়া মেডিকেল হল” নামে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন অত্র মসজিদ পরিচালনা কমিটির সেক্রেটারী, বিকাল বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সরাইল উপজেলা জামায়াতে ইসলামের সভাপতি মাওলানা কুতুব উদ্দিন। এছাড়া মসজিদের অন্যান্য দোকানের মধ্যে ৮হাজার টাকা ভাড়ায় লতিফ ক্লথ স্টোর, ৮হাজার টাকা ভাড়ায় ঠাকুর এলুমিনিয়াম, ৪হাজার টাকা ভাড়ায় জসিম হোমিও প্যাথিক মেডিকেল হল, ৪হাজার টাকা ভাড়ায় সৈয়দ মেডিকেল হল, ৪হাজার টাকা ভাড়ায় বিসমিল্লাহ ইলেক্ট্রিক ও ৪হাজার টাকা ভাড়ায় মুসলিম গার্মেন্টস রয়েছে। এ ছাড়া মসজিদের সম্পদ হিসেবে মসজিদের একটি পুকুর জমা বাবদ আয় বছরে ১৫হাজার টাকা ও পুকুরের পাড় জমা বাবদ আয় বছরে ১হাজার টাকা আয় রয়েছে। এই হিসেবে মুসুল্লিদের দানকৃত টাকাসহ মসজিদের প্রতিমাসে আয় প্রায় ৫০হাজার টাকার অধিক। এদিকে মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জেন ও খাদেমের মধ্যে পেশ ইমাম ও খতিব মাওলানা শেখ আমান উল্লাহ এর সম্মানি ৮হাজার ৫শত টাকা, হাফেজ মাওলানা মশিউর রহমান ৭হাজার ৫শত টাকা, হাফেজ রফিকুল ইসলাম ৭হাজার ৫শত টাকা ও আমিরুল ইসলাম এর সম্মানি ৪হাজার টাকাসহ প্রতি মাসে সম্মানি বাবদ ব্যয় ২৭হাজার ৫শত টাকা। এই হিসেবে প্রতি মাসে তহবিল হিসেবে মসজিদের আয় হয় প্রায় ২০ থেকে ২৫হাজার টাকা। বর্তমানে সভাপতি হিসেবে মীর আনোয়ার, সেক্রেটারী মাওলানা কুতুব উদ্দিন ও ক্যাশিয়ার যৌথভাবে আব্দুল কুদ্দুস ঠাকুর ও খোকন ঠাকুরসহ ৩০সদস্যের মসজিদ পরিচালনা কমিটি রয়েছে বলে জানা গেছে। এ ব্যপারে শাহী জামে মসজিদটির পেশ ইমাম ও খতিম মাওলানা শেখ আমান উল্লাহ এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন মসজিদ পরিচালনা কমিটি একাধিকবার সভা করে অধিকাংশ মুসুল্লিদের সাথে পরামর্শ করে ৩০লক্ষ টাকা ব্যয় ধরে মিনার নির্মাণ কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আশপাশে বহুতল ভবন নির্মাণের কারনে আজানের আওয়াজ বেশী দূরে যেতে মসজিদের মাইক উপরে লাগানো ও মসজিদের ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে এই মিনার নির্মান করা হচ্ছে। তবে মুসুল্লিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মসজিদের ভিতরে জানালায় থাই গ্লাস লাগানো বাকী রেখে, মসজিদের ভিতরে প্রথম বেস্টনীতে অল্প সংখ্যক মুসুল্লিদের জন্য এসির ব্যবস্থা থাকলেও প্রথম বেস্টনীর বাহিরে ভিতরের অংশে অধিকাংশ মুসুল্লিদের জন্য মসজিদের ভিতরে এসির ব্যবস্থা না করে, মসজিদের সিড়িঁ সম্প্রসারন না করে, এছাড়া মসজিদের ভিতরে অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজ বাকী রেখে সাড়ে তিনশত বছরের এই ঐতিহ্যবাহী শাহী জামে মসজিদে ৩০লক্ষ টাকা ব্যয় করে মিনার নির্মাণ কাজে অসুন্তুষ্ট মুসুল্লিদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
আপনার মন্তব্য লিখুন