১০ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

EN

সরাইলে সুদখোরের থাবায় গ্রামছাড়া অসহায় এক পরিবার, সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ

বার্তা সম্পাদক

প্রকাশিত: ১২:১৬ অপরাহ্ণ , ২ মার্চ ২০১৮, শুক্রবার , পোষ্ট করা হয়েছে 8 years আগে

20180302_105251

এম এ করিম সরাইল নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ডেস্ক:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে সুদখোরের থাবায় গ্রাম ছাড়া রয়েছেন এক অসহায় পরিবার। প্রবাসী স্বামীর ভিটি বাড়ি বিক্রি করে সুদে-আসলে টাকা পরিশোধ করলেও খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষরে অতিরিক্ত টাকা দাবি করে পরিবারটিকে প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছেন সুদখোর ব্যবসায়ী। দাবিকৃত টাকা ফেরত না দিতে পারলে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়া হয়। এই পরিস্থিতিতে বৃদ্ধ শুশুর, শাশুরী, শিশু ৩পুত্র ও এক কন্যাকে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় গ্রাম ছাড়া রয়েছেন অসহায় এই পরিবারটি। আজ শুক্রবার(২মার্চ) সকাল ১০টায় সরাইল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী গৃহবধূ মোছা: জিয়াছমিন আরা বেগম। তিনি উপজেলার সদর ইউনিয়নের স্বল্পনোয়াগাঁও গ্রামের প্রবাসী মো: সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী। সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী জিয়াছমিন আরা বেগম লিখিত অভিযোগ পাঠ করেন। লিখিত অভিযোগে ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার শুরিয়া পুকুর পাড়(বড়িউড়া) গ্রামের মৃত তায়েব আলীর পুত্র মো: মুছা মিয়ার নিকট থেকে অভিযোগকারী মোছা: জিয়াছমিন আরা বেগমের স্বামী মো: সিরাজুল ইসলাম সৌদি আরব যাওয়া উপলক্ষে  প্রথমে ২লক্ষ টাকা এবং পরবর্তীতে ৩ লক্ষ টাকা সহ মোট ৫লক্ষ টাকা মাসে ৪০হাজার টাকা সুদ প্রদানের শর্তে গ্রহন করেন। অদ্যাবধি সাড়ে চার লক্ষ টাকা সুদ হিসেবে প্রদান করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে  আরও অভিযোগ করে মোছা: জিয়াছমিন আরা বেগম বলেন, সৌদি আরবের ব্যবসায়িক মন্দার কারনে গত ২৮ফেব্রুয়ারী  ভিটে বাড়ি বিক্রি করে  ৫লক্ষ টাকা প্রদান করে স্ট্যাম্প ফেরত চাইলে তিনি আরও ৭লক্ষ টাকা দেওয়ার দাবি করেন এবং স্ট্যাম্পে এ কথা উল্লেখ আছে বলে জানান। সুদে-আসলে সাড়ে ৯লক্ষ টাকা দিয়ে স্ট্যাম্প ফেরত চাইলেও জিয়াছমিন আরা বেগমকে মো: মুছা মিয়া অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, লাঞ্চনা করে ও চর থাপ্পর মারে এবং বাকী টাকা না দিতে পারলে তার অনৈতিক প্রস্থাবে রাজি হতে বলেন। এ অবস্থায় বৃদ্ধ শুশুর, শাশুরী ও শিশু সন্তানদের নিয়ে অসহায় পরিবারটি এখন গ্রাম ছাড়া। খালি স্ট্যাম্প উদ্ধার,  জীবনের নিরাপত্তাসহ এ ব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে সকলের সহযোগিতা পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন অসহায় এ পরিবারটি। এ ব্যাপারে জিয়াছমিন আরা বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার স্বামী মধ্যপ্রাচ্যে। সেখানে তাঁর অবস্থা তেমন ভাল না। বাড়ি বিক্রির পর আমি শুশুর শাশুরি ও স্কুল পড়ুয়া চার সন্তান নিয়ে ভাশুরের(নজরুল ইসলাম) ঘরে আশ্রয় নিয়েছি। এখন সে বাড়িও ছেড়েছি। আমি নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। মুছা মিয়া ও তাঁর লোকজন আমাদের বড় ধরনের ক্ষতি করে ফেলবে বলে ভয় হচ্ছে।  উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান স্বল্পনোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মো: শের আলম মিয়া বলেন, মুছা মিয়া কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির আশ্রয়ে থেকে সুদের ব্যবসা করে নিরীহ মানুষের রক্ত চুষে খাচ্ছে। তাঁর অত্যাচারে এরই মধ্যে বহু লোক এলাকাছাড়া। একবছর আগে স্বল্পনোয়াগাওঁ গ্রামের বাসিন্দা মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী মিলন মিয়ার স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা(২৭) সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে মুছা মুছা মিয়ার অত্যাচারে আত্বহত্যা করেছেন। মুছা মিয়া বলেন, আমার টাকায় সিরাজ বিদেশ ব্যবসা করছে। আমি আংশিক টাকা পাইছি। সব টাকা দেয় না। আমার টাকা দিতে গড়িমসি করতাছে। আমি কাউকে মারধর করি নাই। হুমকিও দেয় নাই। সব মিথ্যা কথা। এখন আমার তাইলে পাওনা টাকা চাওয়াটাও অপরাধ। উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে ইসরাত বলেন, এ রকম একটি অভিযোগ শুনেছি। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ মো: মফিজ উদ্দিন ভূইয়া বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

আর্কাইভ

November 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
আরও পড়ুন