সরাইলে ভোররাতে সরকারি পুকুরের দশ লক্ষাধিক টাকার মাছ তোলে প্রশাসন পাড়ায় ভাগ-ভাটোয়ারার অভিযোগ, বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসীর দাবি সরাইলকে বাঁচান!
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ১২:৩৬ পূর্বাহ্ণ , ৩০ জানুয়ারি ২০১৯, বুধবার , পোষ্ট করা হয়েছে 5 years আগেএম এ করিম সরাইল নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ডেস্ক:
“ভাই সরাইলকে বাঁচান, একটা নিউজ করেন, সরাইল কাচারী পাড়ার সরকারি পুকুরে ভোর রাতে গোপনে জাল ফেলে মাছ ধরে প্রশাসন পাড়ার সরকারি কর্মকর্তা- কর্মচারীরা ভাগবাটোয়ারা করে নিয়ে গেছে। সরাইলের সরকারি সম্পদ সরকারের রাজস্বকে ফাঁকি দিয়ে লুটে-ফুটে খাবে এটা মেনে নেওয়া যায় না, এ ব্যাপারে একটা নিউজ করেন ভাই প্লিজ, সরকারের উর্ধ্বতনমহলসহ সর্বস্তরের লোকজন জানুক।” মঙ্গলবার(২৯জানুয়ারী) সন্ধায় মুঠোফোনে উপজেলার সদর ইউনিয়নের কাচারী পাড়ার পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দা আব্দুল জব্বার মুঠোফোনে সরাইল নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এ কথা বলেন। অনুসন্ধানে জানা যায়, মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারী) ভোররাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার প্রশাসন পাড়ার উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদ সংলগ্ন পুকুরে গোপনে জাল ফেলে মাছ ধরার ঘটনা ঘটে। উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণে থাকা সরকারি ঐ পুকুর থেকে গোপনে জাল ফেলে প্রায় দশ লক্ষাধিক টাকা মূল্যের মাছ তোলে স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে ভাগবাটোয়ারা করে নেওয়ার ঘটনায় এলাকায় তুলকালাম সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে সরকারি এই পুকুর থেকে এইভাবে মাছ তোলে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টিকে চুরি বা পুকুর চুরি হিসেবে অবহিত করছেন। এ ব্যপারে পক্ষে-বিপক্ষে বক্তব্যে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে প্রায় দশ লক্ষাধিক টাকার মাছ গোপনে তুলে সরকারি রাজস্ব ফান্ডে ফাঁকি দিয়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজেদের মাঝে ভাগবাটোয়ারা করে নিয়ে গেছেন। উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি হাজী মোঃ ইকবাল হোসেন বলেন, আমরা টাকা দিয়ে মাছ কিনে এনেছি, একেকটি মাছের ওজন পাঁচ থেকে সাত কেজি। আওয়ামী লীগ নেতা হাজী মাহফুজ আলী বলেন, সরকারি এই পুকুর আমি কয়েক বছর আগে ইজারা নিয়েছিলাম। তিন বছরের জন্য সাড়ে তিন লাখ টাকা। এই পুকুরে অন্তত ২০ লাখ টাকার বেশি বড় বড় মাছ রয়েছে।সরাইল উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব রফিক উদ্দিন ঠাকুর বলেন, বিগত সাড়ে ছয় বছর যাবত এই পুকুরে জাল ফেলা হয়নি। পুকুরের একেকটি মাছের ওজন অন্তত সাত থেকে আট কেজি। এভাবে গোপনে ভোররাতে পুকুরের মাছ ধরে ভাগবাটোয়ারা করা উচিত হয়নি।এ ব্যপারে সরাইল উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোঃ জহিরুল ইসলাম বলেন, সকালে অফিসে এসে জানতে পেরেছি এই পুকুর থেকে ভোরে জাল ফেলে মাছ ধরা হয়েছে। যেহেতু পুকুরটি লীজ দেয়া হয়নি। সেহেতু আগের ইউএনও এই পুকুরের মাছ বিক্রির টাকার একটি অংশ এ মসজিদ উন্নয়নের জন্য সবসময় দিয়ে গেছেন। তাছাড়া এ পুকুরের মাছ চাষ সহ রক্ষণাবেক্ষণ করতেন মসজিদ কর্তৃপক্ষ ও ইমাম সাহেব। সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ এস এম মোসা বলেন, এই পুকুরের মাছ বিক্রি করা হয়েছে, কোনো ভাগবাটোয়ারা হয়নি এবং এসবের নিয়ম নেই। মাছ বিক্রির সকল অর্থ রাজস্ব ফান্ডে জমা করা হবে।
সরাইল উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান বলেন, এই পুকুর পরিষদের সম্পদ। এটি ইজারার নিয়ম নেই। এই পুকুরের মাছ প্রশাসনপাড়ায় সবাইকে ভাগবাটোয়ারা করে দেয়ার নিয়ম আছে। তারপরও সবার কাছ থেকে কিছু টাকা তুলে রাজস্ব ফান্ডে জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করবো।
আপনার মন্তব্য লিখুন