সরাইলে ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে উঠছে থ্রি-স্টার রিসোর্ট, খুশি ভ্রমণ পিপাসুরা
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ৭:৪৭ অপরাহ্ণ , ১ জুলাই ২০২২, শুক্রবার , পোষ্ট করা হয়েছে 1 year আগে
সরাইলে ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে উঠছে থ্রি-স্টার রিসোর্ট, খুশি ভ্রমণ পিপাসুরা
এম এ করিম সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক সড়কের পাশে উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের ধর্মতীর্থ এলাকায় বিল আকাশীর তীর ঘেঁষে নির্মিত হচ্ছে থ্রি-স্টার রিসোর্ট এন্ড রেস্টুরেন্ট। উপজেলার নোয়াঁগাও গ্রামের হাফেজ আলী নেওয়াজ, ইব্রাহিম মৃধা ও কালিকচ্ছ ইউনিয়নের মনিরবাগ এলাকার জিহাদ আহমেদ নামের তিন বন্ধুর যৌথ প্রচেষ্টায় এখানে গড়ে উঠছে থ্রি-স্টার রিসোর্ট এন্ড রেস্টুরেন্ট।
সরজমিনে রিসোর্ট এলাকা ঘুরে উদ্যোক্তা ও পর্যটকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়ীয় জেলাসদরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক পথে সরাইল ও নাসিরনগর উপজেলার জনগণের যাতায়াতের একমাত্র সড়ক সরাইল-নাসিরনগর আঞ্চলিক সড়ক। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সরাইল বিশ্বরোডের সাথে সংযুক্ত সড়কটি উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের ধর্মতীর্থ এলাকার হাওড় বেষ্টিত শাপলা বিল প্রকাশ বিল আকাশির বুক ছিঁড়ে নাসিরনগর উপজেলার মধা দিয়ে হবিগঞ্জ জেলার লাখাই উপজেলার সাথে সংযুক্ত হয়েছে। ধর্মতীর্থ এলাকার বিল আকাশীর মধ্য দিয়ে সড়কটি যাওয়ায় সড়কের দুই দিকের বিশাল হাওর এলাকায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখা যায়। বর্ষা মৌসুমে সড়কের দুই দিকে কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে কেবল পানি আর পানি বিদ্যমান থাকে। বর্ষায় পানির ঢেউ এর তালে তালে মুক্ত হাওয়া উপভোগ করতে পড়ন্ত বিকালে প্রতিদিন শত শত ভ্রমন পিপাসু মানুষ এখানে ভীড় জমান। সরাইল উপজেলার বিভিন্ন এলাকাসহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও এর আশ-পাশের জেলা থেকে ভ্রমন পিপাসু লোকজন পরিবার-পরিজন নিয়ে এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যসহ ঢেউয়ের তোড়ে মুক্ত হাওয়া উপভোগ করতে এখানে ছুঁটে আসেন। বর্ষা মৌসুমে ও ছুঁটির দিনে এখানে পর্যটকদের উপচে পড়া ভীড় দেখা যায়। এ সময় সাময়িক সময়ের জন্য হাওরের পানিতে, নৌকা ও স্পিড বোটে এবং সড়কের উপর ঘোড়াসহ বিভিন্ন গাড়িতে পর্যটকদের ঘুরতে দেখা যায়। এছাড়া বছরের দুই ঈদ উপলক্ষে ছুটির দিনগুলোতে এখানে জমে পর্যটকদের মিলন মেলা। এ সময় নাগর-দোলাসহ পর্যটকদের বিনোদনের বিভিন্ন সামগ্রী থাকতে দেখা যায়। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে সড়কটির দুই তীরে বসারমত স্থায়ী কোনো কাঠামো গড়ে উঠেনি। পর্যটকদের প্রাকৃতিক কাজ সাড়ার জন্য এখানে নেই কোনো পাবলিক টয়লেট। এছাড়া পর্যটকদের বিনোদনের জন্য নেই কোনো স্থায়ী অবকাঠামো। এমনি অবস্থায় পর্যটকদের দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল এখানে বিনোদনের জন্য ও এখানকার সৌব্দর্য বর্ধনের জন্য সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে কিছু একটা হউক। অবশেষে ব্যক্তি উদ্যোগে এখানে থ্রি-স্টার রিসোর্ট ও রেস্টুরেন্ট এর নির্মাণ কাজ চলমান থাকার খবরে ভ্রমন পিপাসু পর্যটকদের মাঝে স্বস্থি ফিরে এসেছে। নির্মাণাধীন এই থ্রি-স্টার রিসোর্ট দেখতে প্রতিদিন শত শত ভ্রমন পিপাসু লোকজন সেখানে ভীড় জমান। ভ্রমন পিপাসু অনেকেই এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
এ ব্যপারে এখানকার সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা শাহাগীর মৃধা নামের এক পর্যটক বলেন, মিনি কক্স বাজার নামে খ্যাত ধর্মতীর্থ এলাকার বিল আকাশীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতি দিন শত শত মানুষ এখানে আসেন। কিন্তু এখানে দূর-দূরান্ত থেকে আসা লোকজন নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। স্থায়ী কোনো স্থাপনায় লোকজন না থাকায় সন্ধার পরে এখানে চুরি-ডাকাতির মত ঘটনাও ঘটে। এছাড়া প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দেওয়ার কাজের জন্য এখানে কোনো পাবলিক টয়লেটের ব্যবস্থা নেই। নেই কোনো বিনোদন কেন্দ্র। ভ্রমন পিপাসু মানুষের জন্য এখানে কিছু একটা হউক এমনটাই ছিল এখানে ঘুরতে আসা লোকজনের দীর্ঘদিনের দাবি। অবশেষে ব্যক্তি উদ্যোগে এখানে থ্রি-স্টার রিসোর্ট এন্ড রেস্টুরেন্ট নির্মিত হওয়ার খবর পেয়ে দেখতে এসেছি। রিসোর্টটি দেখে অনেক ভাল লাগছে। আশা করি এই রিসোর্ট নির্মাণ কাজ শেষ হলে এখানে আসা পর্যটকরা বাড়তি আনন্দ ও সুযোগ-সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন। এই জন্য উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ জানান তিনি।
এ ব্যপারে রিসোর্ট নির্মাণে জড়িত তিনজন উদ্যোদের একজন উপজেলার নোয়াঁগ্রামের বাসিন্দা ও জাতীয়পার্টি নেতা হাফেজ আলী নেওয়াজ বলেন, দুই বছর ধরে পরিকল্পনা করে এখানে ঘুরতে আসা পর্যটকদের বাড়তি বিনোদনের দিক ভেবে আমরা তিনজন মিলে আমাদের নিজস্ব ১৫ বিঘা জমিতে একটি থ্রি-স্টার রিসোর্ট এন্ড রেস্টুরেন্ট নির্মাণ কাজ গত তিন মাস আগে শুরু করেছি। পরিপূর্ণভাবে কাজ শেষে হতে আরও দুই বছর লাগবে। তিনি আরও বলেন, নির্মাণাধীন এই রিসোর্টের আশ-পাশে আমাদের আরও একশত বিঘা জমি রয়েছে। ভবিষ্যতে এখানে বহুতল ভবন নির্মাণসহ একটি শিশু পার্ক গড়ে তোলার পাশাপাশি ভ্রমন পিপাসু পর্যটকদের বাড়তি বিনোদনের জন্য প্রয়োজনীয় স্থাপনা নির্মাণ করার পরিকল্পনা নিয়েই প্রাথমিকভাবে থ্রি-স্টার রিসোর্ট এন্ড রেস্টুরেন্টের কাজ শুরু করেছি। পরিপূর্ণভাবে নির্নাণ কাজ শেষ হলে এটি দেশের অন্যতম একটি পর্যটন কেন্দ্র হবে বলে আমরা আশাবাদী। এ ব্যপারে আমরা সকলের সার্বিক সহযোগিতা ও দোয়া কামনা করছি।
আপনার মন্তব্য লিখুন