সরাইলে পুলিশ হেফাজতে ব্যবসায়ীর রহস্যজনক মৃত্যু, ১৩ জনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের, আটকঃ ১
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ৩:৩০ অপরাহ্ণ , ২২ এপ্রিল ২০২২, শুক্রবার , পোষ্ট করা হয়েছে 11 months আগে
সরাইলে পুলিশ হেফাজতে ব্যবসায়ীর রহস্যজনক মৃত্যু, ১৩ জনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের, আটকঃ ১
নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে পুলিশ হেফাজতে নজির আহমেদ সাফু (৪০) নামে এক ব্যবসায়ীর রহস্যজনক মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার(২১ এপ্রিল) দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে। মৃত নজির আহমেদ সাফু উপজেলার সদর ইউনিয়নের নিজ সরাইল গ্রামের মোল্লাবাড়ির হাফেজ উবায়দুল্লাহ এর পুত্র ও জাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক হোসাইন আহমেদ তফছির এর ছোট ভাই।
মৃত নজির আহমেদ সাফুর লাশ এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
সরজমিনে মৃত নজির আহমেদ এর বাড়িতে গিয়ে হৃদয় বিদারক দৃশ্য দেখা যায়। স্বজনদের কান্নায় আকাশ-বাতাশ ভারী হয়ে ওঠে। এ সময় মৃত নজির আহমেদের বড় ভাই ও জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক হোসাইন আহমেদ তফছির স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, আমার ছোট ভাই নজির আহমেদ ঢাকায় একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ছিলেন। আমার দাদা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ডঃ আ ফ ম শহীদুল্লাহ এর নিকট থেকে আমার ছোট ভাই নজির আহমেদ আমাদের এলাকায় একটি বাড়ি ক্রয় করে। এর পর থেকেই স্থানীয় মেম্বার মোশাহেদ উল্লাহর যোগসাজসে এলাকার একটি কুচক্রী মহলের সাথে আমার ভাই এর বিরোধ সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে আমার ভাইকে ঐ কুচক্রী মহল বিভিন্ন সময়ে মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার(২১ এপ্রিল) রাত ৯ টা ৪৫ মিনিটের দিকে একই এলাকার প্রতিপক্ষ হেলাল মিয়ার পুত্র জুম্মান মিয়া (৩৫) আকর্ষিকভাবে আমার ছোট ভাই নজির আহমেদ এর বাড়ির একটি কক্ষে ঢুকে ড্রয়ার খুলে কাগজ পত্র তছনছ করে ফেলে । খবর পেয়ে নজির আহমেদ বাড়িতে গিয়ে ঘরে প্রবেশ করে তাকে বাঁধা দিলে তাদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এ সময় এলাকার লোকজন ও স্থানীয় মসজিদের মুসল্লিরা তারাবি নামাজ শেষে ঐ বাড়িতে এসে জড়ো হয়। এরই ফাঁকে সরাইল থানার এসআই সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঐ বাড়িতে এসে জুম্মান মিয়াসহ আমার ছোট ভাই নজির আহমেদকে থানায় নিয়ে যান।
তিনি আরও বলেন, কিছুক্ষন পর এলাকার দুইজন সালিশকারক নিয়ে আমি থানা গেইটে যাওয়ার পর শুনতে পাই আমার ভাইকে আহত অবস্থায় দুইজন পুলিশ সদস্য সরাইল হাসপাতালে নিয়ে গেছেন। পরে হাসপাতালে গিয়ে আমি আমার ভাই এর মৃত্যু সংবাদ শুনতে পাই। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসকের সাথে কথা বলে জানতে পারি হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই আমার ভাই এর মৃত্যু হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পুরো ঘটনায় স্থানীয় মোশাহেদ উল্লাহ মেম্বার ও সরাইল থানা পুলিশের ভূমিকা ছিল রহস্যজনক। একটি বড় কুচক্রী মহল আমার ভাইকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে। আমার ভাই এর হত্যার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নেব এবং সেই সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্থির দাবি করছি।
এ ব্যপারে সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আসলাম হোসেন বলেন, আমাদের উপর আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। জুম্মানসহ নজির আহমেদকে থানায় নিয়ে আসার পর নজির আহমেদ অসুস্থ হয়ে গেলে তাকে সরাইল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
তিনি আরও বলেন, লাশ ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ব্যপারে মৃত নজির আহমেদের ভাই জাফর আহমেদ বাদী হয়ে মোশাহেদ উল্লাহ মেম্বারসহ ১৩জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। মামলার ২ নং আসামী জুম্মানকে আটক করা হয়েছে।
আপনার মন্তব্য লিখুন