সরাইলে চলছে দাঙ্গা মুক্ত সরাইল গড়ার সামাজিক আন্দোলন, নায়কের ভূমিকায় ওসি সাহাদাত হোসেন টিটো ও উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব রফিক উদ্দিন ঠাকুর, বিভিন্ন মহলে প্রশংসা
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ১০:০৪ অপরাহ্ণ , ৯ নভেম্বর ২০১৯, শনিবার , পোষ্ট করা হয়েছে 4 years আগে
এম এ করিম সরাইল নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ডেস্কঃ
আধিপত্য বিস্তার, পূর্ব শত্রুতা, জুয়া খেলা, মাদক, গোস্তে হাড্ডি বেশি দেওয়া, তুচ্ছ ঘটনাসহ নানা কারনে গোষ্ঠীগত ও গ্রামভিত্তিক দাঙ্গা যেন সরাইলের নিত্য দিনের সঙ্গী ছিল। সরাইল মানেই দাঙ্গা প্রবণ এলাকা এমন বদনাম যেন সরাইলের পিছু ছাড়ছিল না। এসব রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে শিশু ও নারীসহ অনেক লোকের প্রাণহানিসহ আহত হয়েছেন বহুলোক। ঘর-বাড়ি ভাঙ্গচুরসহ লুটতরাজের কবলে নিঃস্ব হয়েছেন বহু পরিবার। হামলা মামলায় জর্জড়িত রয়েছেন গ্রামের সহজ সরল খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। এমনি পরিস্থিতিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে দেশ-বিদেশে অবস্থানরত সরাইলের সাধারণ নাগরিকরা নিজ নিজ কর্মস্থলে প্রতিনিয়ত সরাইলের সংঘর্ষের খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করে এ থেকে পরিত্রানের দাবি জানাই। এলাকার সাধারণ শান্তিপ্রিয় মানুষও দাঙ্গামুক্ত হয়ে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের আক্ষেপ প্রকাশ করেন। বিভিন্ন সভা সেমিনারে ও গ্রাম্য শালিশে এ সব রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বন্ধের জোড় প্রচেষ্টা চালান এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। কিন্ত কিছুতেই আলোর মুখ দেখেনি এই প্রচেষ্টা। বেশ কয়েক বছর পূর্বে তৎকালীন সরাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ এর সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব রফিক উদ্দিন ঠাকুর যিনি বর্তমানেও সরাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তিনি পুলিশ প্রশাসন ও সরাইলের শান্তিপ্রিয় মানুষকে নিয়ে সরাইল বড্ডাপাড়া গরু বাজারে দেশীয় অস্ত্র সমর্পণ অনুষ্ঠান করে সরাইলকে দাঙ্গামুক্ত করার চেষ্টা করেন। বিভিন্ন সময়ে দাঙ্গার ছোট খাটো সংবাদ প্রচার না করতে মিডিয়া কর্মীদেরও অনুরোধ জানান তিনি। এছাড়া বিভিন্ন শালিশী সভায় এলাকাকে দাঙ্গামুক্ত করার জোড়ালো বক্তব্য দিতে শোনা যায়। কিন্তু দাঙ্গা যেন সরাইলকে ছাড়তে নারাজ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষ যেন নিত্য দিনের খবরে পরিনত হয়েছিল। সর্বশেষ সরাইল থানার ওসি সাহাদাত হোসেন টিটো সরাইল থানায় যোগদান করার পর থেকেই দাঙ্গা প্রবণ এলাকা হিসেবে সরাইলের বদনামকে মুছে ফেলার অভিপ্রায়ে দাঙ্গামুক্ত সরাইল গড়ার সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজনের সাথে মতবিনিময় করেন তিনি। উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজনকে সাথে নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ সুপারের উপস্থিতিতে সরাইল অন্নদার আভন্তরীন মাঠে সমাবেশ করে দাঙ্গামুক্ত সরাইল গড়ার সামাজিক আন্দোলন ঘোষনা করেন তিনি। সরাইল উপজেলার বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, উপজেলা কমিউনিটি পুলিশিং, বিভিন্ন মিডিয়াকর্মী ও বিভিন্ন স্তরের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ সরাইলকে দাঙ্গামুক্ত করার আন্দোলনে স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন জানিয়ে একযোগে কাজ করার ঘোষনা দেন। এর পর থেকেই সরাইল থানার ওসি সাহাদাত হোসেন টিটোর পরিকল্পনায় ও স্থানীয় এলাকাবাসীর উদ্যোগে উপজেলার আঁখিতারা, কালিকচ্ছ, উচালিয়াপাড়া, বিষুতারা, সৈয়দটুলা, অরুয়াইলসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পর্যায়ক্রমে দেশীয় অস্ত্র সমর্পণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জনসচেতনতা সৃষ্টি ও শপথ গ্রহন করার মাধ্যমে দাঙ্গামুক্ত সরাইল গড়ার সামাজিক আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। সর্বশেষ আজ শনিবার(৯নভেম্বর) ঘূর্ণিঝর “বুলবুল” এর বৈরী আবহাওয়ায় উপজেলার কালিকচ্ছ এলাকায় দেশীয় অস্ত্র সমর্পণ অনুষ্ঠান করা হয়। সরাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যানগণ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সরাইল সদর ইউপি চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বার, সরাইল থানার পুলিশ পরিদর্শক, এস আই, এএসআই, কনস্টেবল, বিভিন্ন এলাকার চৌকিদার, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, বিভিন্ন প্রেস মিডিয়াকর্মীবৃন্দসহ বিভিন্ন স্তরের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ বিভিন্ন সময়ে এ সকল অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে এ আন্দোলনকে সফল করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। কিছুটা হলেও এ আন্দোলন আলোর ছড়াচ্ছে।আশার কথা হচ্ছে এ আন্দোলনের ফলে সরাইলে শান্তির সুবাতাস বয়তে শুরু করেছে বলে শান্তি প্রিয় মানুষের ধারনা। এর ফলে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া বড় ধরনের কোনো সংঘর্ষের তেমন কোনো খবর পাওয়া যাচ্ছে না। এতে করে বিভিন্ন মহলের পক্ষ থেকে সরাইল থানার ওসি সাহাদাত হোসেন টিটোসহ সংশ্লিষ্ট সকলের ভূয়ঁশী প্রশংসা করছেন এলাকাবাসী। দাঙ্গামুক্ত সরাইল গড়ার এ সামাজিক আন্দোলনকে স্বাগত জানিয়েছেন এলাকাবাসী। শান্তির সরাইল গড়তে এ ধারা অব্যাহত থাকুক এমনটাই প্রত্যশা করছেন এলাকার শান্তিপ্রিয় মানুষ।
আপনার মন্তব্য লিখুন