সরাইলে উপ-নির্বাচন, ভোট কক্ষে সাংবাদিক নিষিদ্ধ, জাল ভোট ৩ তরুণীর কারাদন্ড!
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ১০:২৬ পূর্বাহ্ণ , ২১ অক্টোবর ২০২০, বুধবার , পোষ্ট করা হয়েছে 3 years আগে
সরাইলের চুন্টা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়া সম্পন্ন হয়েছে। তবে ভোট কক্ষে সাংবাদিক নিষিদ্ধ। জাল ভোট দেয়ার চেষ্টা। ভ্রাম্যমান আদালতের ৩ তরুণীর কারাদণ্ড ও গণমাধ্যম কর্মীদের পর্যবেক্ষণ কার্ড প্রদানে তেলেসমতির মত ঘটনার মধ্য দিয়েই শেষ হয়েছে নির্বাচন। সরজমিন ও রিটার্নিং কর্মকর্তার দফতর সূত্র জানায়, চুন্টা ইউনিয়নের মোট ভোটার সংখ্যা ২৪ হাজার ৫১। এই উপনির্বাচনকে ঘিরে সমগ্র চুন্টা গত এক সপ্তাহ ধরে ছিল সন্ত্রস্থ। জাপার নির্বাচনী সভায় বাধা। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পুলিশের উপস্থিতি। নৌকা পুঁড়িয়ে ফেলার অভিযোগে মামলা। গত সোমবার থেকে চুন্টা বাজারের ফার্মেসী সহ সকল দোকানপাট বন্ধ। এসব ঘটনায় সেখানকার মানুষের মনে অজানা আতঙ্ক বিরাজ করছিল। আওয়ামীলীগ, জাপা, ইসলামি ঐক্যজোট ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে ৪ প্রার্থীর ছিল লড়াই। মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলে ভোট গ্রহন। ১০টি কেন্দ্রে সর্বক্ষণ উপস্থিত ছিলেন ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট। র্যাব, বিজিবি ও বিপুল সংখ্যক পুলিশের উপস্থিতিতে নীরব ছিলেন সেখানকার ভোটার সমর্থক ও প্রার্থীরা। তবে অনেক লোকের ধারণা ছিল ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর সমর্থকরা প্রকাশ্যে সীল মারতে পারে। এমনটি হয়নি। তবে জাল ভোট দেয়ার চেষ্টা ছিল বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে। দুপুর পোনে তিনটার দিকে রসুলপুর উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে জাল ভোট দেয়ার চেষ্টা কালে হাতে নাতে ধরা পড়ে যায় ৩ তরুণী। ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে তাদের প্রত্যেককে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। কারাদণ্ড প্রাপ্তরা হলো- রসুলপুর গ্রামের আবদুর রহমানের মেয়ে সাদিয়া আক্তার (২০), হাফিজুর রহমানের মেয়ে তাইয়্যিবা আক্তার (২০) ও নওয়াব মিয়ার মেয়ে সুমাইয়া সুলতানা (২০)। ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ফিরোজা পারভিন গণমাধ্যমকে বলেন, ওই ৩ তরুণী জাল ভোট দেয়ার চেষ্টা করেন। তারা যে নামে ভোট দিতে এসেছিলেন সেই নামের মিল নেই। আবার একজনের ভোট আগেই দেয়া হয়ে গেছে। সবকিছু যাচাই বাছাই করে তাদেরকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এর আগে দুপুর ১টার দিকে চুন্টা এসি একাডেমি কেন্দ্রে জাল ভোট দিতে আসায় এক যুবককে আটক করেন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট।
ভোট কক্ষে সাংবাদিক নিষিদ্ধ: দুপুর ১২টার পর দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি শাহাদাৎ হোসেন ও সরাইল প্রতিনিধি মোহাম্মদ বদর উদ্দিন সহ ৪ জন সাংবাদিক যান গাঘরাজুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে। মাঠে থাকতেই সরাইল উপজেলা (আইটি) সহকারি প্রোগ্রামার শাকিল আহমেদ বলেন, কোন সাংবাদিক ভোট কক্ষে প্রবেশ করবেন না। পরে অফিস কক্ষ থেকে বেরিয়ে আসেন কেন্দ্রের দায়িত্বে নিয়োজিত নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট উম্মে ইমামা বানিন। তিনি সাংবাদিককের পরিস্কার ভাষায় বলেন, আপনারা বাহির থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করুন। ভোট কক্ষের ভেতরে সাংবাদিক প্রবেশ নিষেধ। এটা আইনি বিষয়। পরক্ষণেই রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহবুব আলম মুঠোফোনে জানান, ভোট কক্ষে সাংবাদিক নিষিদ্ধ নয়। সেখানে যেতে বাঁধা নেই। তবে বুথের ভেতরে যেতে পারবেন না। এ ঘটনার ১৫-২০ মিনিট পর নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট উম্মে ইমামা বানিন মুঠোফোনে সরাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি ও প্রথম আলো পত্রিকার প্রতিনিধিকে বলেন, আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে জানতে পেরেছি ভোট কক্ষের ভেতরে সাংবাদিক প্রবেশ করতে পারবেন। আপনারা আসুন। ততক্ষণে সাংবাদিকরা অন্য কেন্দ্র পর্যবেক্ষণে চলে যান।
আপনার মন্তব্য লিখুন