সরাইলে ইউনিয়ন পরিষদ সচিবকে নিয়ে হৈ চৈ, অপসারণ দাবি
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ৭:০০ অপরাহ্ণ , ৮ আগস্ট ২০২২, সোমবার , পোষ্ট করা হয়েছে 10 months আগে
সরাইলে ইউনিয়ন পরিষদ সচিবকে নিয়ে হৈ চৈ, অপসারণ দাবি
এম এ করিম সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মোহাম্মদ রুবেল ভূঁইয়াকে নিয়ে রীতিমত এলাকায় হৈ চৈ শুরু হয়েছে। জন্মনিবন্ধন নিয়ে জনগণকে হয়রানি, কর্মক্ষেত্রে অবহেলা, অফিসে অনিয়মিত হাজিরা এসব অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠেছেন এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।
এ অবস্থায় নিজ অফিসের চেয়ারে বসে আয়েশি ভঙ্গিমায় সচিব মোহাম্মদ রুবেল ভূঁইয়া ধুমপান করার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। একজন সরকারি কর্মকর্তার এ সব ঔদ্ধ্বত্বপূর্ন কর্মকান্ডে বিস্ময় প্রকাশ করছেন স্থানীয় লোকজন। ঐ সচিবের খুঁটির জোড় কোথায় এমন প্রশ্ন তোলে এলাকার অনেকেই মেতে ওঠেছেন মুখরোচক সমালোচনায়।
ইউনিয়ন পরিষদে সেবা নিতে আসা ভুক্তভোগী লোকজন ছাড়াও সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার নিজেও সচিবের নানা স্বেচ্ছাচারী কর্মকান্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এ অবস্থায় ঐ সচিবের অপসারণ দাবি করছেন এলাকাবাসী।
জানা যায়, সরাইল সদর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব হিসেবে মোহাম্মদ রুবেল ভূঁইয়া যোগদানের শুরু থেকেই দায়িত্ব পালনে অনীহা ও অবহেলার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। সুবিধাভোগীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও কাজে দীর্ঘসূত্রিতা হয়ে ওঠে নিত্যদিনের বিষয়। তাঁর দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকাণ্ড ও হয়রানিতে চরমভাবে অতিষ্ঠ হয়ে ইউনিয়ন পরিষদ ঘেরাও করেন স্থানীয় লোকজন। সরকারি চাকরির নিয়মনীতির কোনো তোয়াক্কা না করায় ইউনিয়ন পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম অনেকটা থমকে রয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের সেবা নিতে এসে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এলাকার জনগণ।
সদর ইউনিয়নের সৈয়দটুলা গ্রামের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, স্কুল থেকে বাচ্চাদের কাগজ পত্র জমা দিতে বলতাছে, সচিবের অবহেলার কারনে দিতে পারতাছি না। আমি প্রতিদিন সচিবের অফিসে এসে ফিরে যাই। আমাদের কি অন্য কাজ কর্ম নাই? শুধু এখানে আইসা ঘণ্টার পর ঘণ্টা, দিনের পর দিন ঘুরে যাই।
ভুক্তভোগীদের সঙ্গে নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান অফিসে ঢুকে সরাইল উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শের আলম মিয়া বলেন, ইউপি সচিবের স্বেচ্ছাচারিতা ও অবহেলায় এলাকার জনগণ অতীষ্ট। এ সময় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনি অফিস তালা দিয়ে চলে যান, তাহলে সাধারণ মানুষ মনে করবে চেয়ারম্যানও নাই, সচিবও নাই। তখন সাধারণ মানুষ আর অফিসে আসবে না। হয়রানির শিকারও হবেন না।
নানা অনিয়মের অভিযোগে সচিব রুবেল ভুইয়ার বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল জব্বার। তাঁর এই আবেদনের প্রেক্ষিতে ইউপি সচিব রুবেল ভুইয়াকে শোকজ করেছেন জেলা প্রশাসক। এর আগে তাঁকে শোকজ করেছিলেন সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আরিফুল হক মৃদুল।
এ ব্যপারে অভিযুক্ত ইউপি সচিব রুবেল ভুইয়া বলেন, আমি অসুস্থ, সেই জন্য আসতে পারিনি। আর গত সপ্তাহেও আমি অফিস করেছি।
এ ব্যপারে সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার বলেন, সচিব রুবেল ভুইয়া সরাইল সদর ইউপিতে যোগদানের পর থেকে নিয়মিত অফিস না করার বিষয়টি ডিসি মহোদয় ও ইউএনও মহোদয়কে অবগত করেছি।তাঁর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগও দিয়েছি। আশা করি অচিরেই তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যপারে সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আরিফুল হক মৃদুল বলেন, দায়িত্ব পালনে অবহেলাসহ তাঁর সকল অনিয়মের কারণে জেলা প্রশাসক মহোদয় তাঁকে শোকজ করেছেন। এর আগে আমি শোকজ করেছি। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয়ভাবে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনার মন্তব্য লিখুন