২৫শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

EN

সরাইলে আওয়ামীলীগ নেতার নেতৃত্বে শহিদ মিনারের নাম ফলক ভাঙচুরের অভিযোগ!

বার্তা সম্পাদক

প্রকাশিত: ৯:১৯ অপরাহ্ণ , ২৬ মার্চ ২০১৯, মঙ্গলবার , পোষ্ট করা হয়েছে 5 years আগে

সরাইল নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক রিপোর্ট:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের প্রাক্কালে একটি শহিদ মিনারের নাম ফলকের ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে উপজেলার কালীকচ্ছ বাজারে স্থাপিত কালীকচ্ছ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে এ ঘটনা ঘটে। দুই বছর আগে উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় ওই বাজারের আশ পাশের ১০ জন যুবকের একটি কমিটি শহিদ মিনারটি নির্মাণ করেন।  শহিদ মিনারের নাম ফলকটিতে ওই ১০ জন নির্মাতার নাম লিখা ছিল। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।  স্থানীয় সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের মার্চ মাসে কালীকচ্ছ ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন ছয় শতাংশ জমির ওপর একটি শহিদ মিনার নির্মিত হয়। এর জন্য ২০১৭ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে স্থানীয় সাংবাদিক মোহাম্মদ মাসুদকে সভাপতি এবং কালীকচ্ছ ইউনিয়ন শাখা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ছলিম উদ্দিনকে সাধারণ সম্পাদক করে ১০ সদস্যের একটি শহিদ মিনার নির্মাণ কমিটি গঠন করেন। ওই কমিটি উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় কালীকচ্ছ ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন জায়গাটি দখলমুক্ত করেন। এর আগে জায়গাটি দীর্ঘ দিন ধরে একটি চক্র দখলে রেখেছিলেন। পরে ওই বছরের ১০ মার্চ ওই কমিটি শহিদ মিনার নির্মান কাজ শুরু করেন। এ নিয়ে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবু মুসা মৃধার সাথে শহিদ মিনার নির্মাণ কমিটির বিরোধ দেখা দেয়। ২০১৮ সালের মার্চের প্রথম দিকে ওই কমিটি নিজেদের প্রচেষ্টায় শহিদ মিনার নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেন। তারা শহিদ মিনারের পাশে কমিটির ১০ সদস্যের নামে একটি নাম ফলক স্থাপন করেন। এতে আরও ক্ষিপ্ত হন আবু মুসা মৃধা। ওই বছর তার হুমকিতে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠান করতে পারেনি স্থানীয় লোকজন। মোহাম্মদ মাসুদ বলেন,‘গত বছর ২৬ মার্চের অনুষ্ঠান করতে পারিনি। এ ছাড়া ওই দিন সন্ধ্যায় আবু মুসার লোকজন আমাদের কমিটির সদস্য আবদুর রাজ্জাককে মারধর করে তার হাত পা ভেঙ্গে দিয়ে ছিলেন। অন্য সদস্যদের হুমদি ধামকি দিচ্ছিলেন। এ ব্যাপারে ২৮ মার্চ সরাইল থানায় মামলা হয়। এর প্রধান আসামি ছিলেন আবু মুসা মৃধার ছেলে রাসেল মৃধা। মামলাটি ৭ এপ্রিল স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সম্পৃক্ততায় সালিস বৈঠকের মাধ্যমে নিস্পত্তি হয়। ওই সালিসে আবু মুসার ছেলে ও তার লোকজনকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন সালিসকারকরা। এর পরও আবু মুসা মৃধার লোকজন শহিদ মিনারের পাশের নাম ফলকটি ভাঙচুরের চেষ্টা চালায়।’   ছলিম উদ্দিন বলেন, আজ  মঙ্গলবার সকালে আবু মুসা মৃধার উপস্থিতিতে তার ছেলে রাসেল মৃধা ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলী মিয়ার নেতৃত্বে শহিদ মিনারের নামফলকটি ভাঙ্গা হয়। এতে আমরা কেউ আজ শহিদ মিনারে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠান করতে যায়নি। তারাই শহিদ মিনার দখলে রেখে কয়েকটি সংগঠনের নামে পুস্পমাল্য অর্পণ করেছেন। আশ পাশের কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা সংগঠন এতে অংশ নেননি।’   আবু মুসা মৃধা বলেন, আজ জাতীয় দিবসের সব অনুষ্ঠান ওই শহীদ মিনারে হয়েছে। সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগমের নামেও পুস্পমাল্য দেওয়া হয়েছে। এখানে কোনো সমস্যা নেই। তবে শুনেছি ওই শহিদ মিনারের পাশে বিতর্কিত ব্যক্তিদের নাম লিখা ছিল। কে বা কারা সকালে ভেঙ্গে দিয়েছে। এর সাথে আমি বা আমার কোনো লোক জড়িত নয়। সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন,‘ শহিদ মিনারের পাশের নাম ফলকটি ভাঙ্গার ঘটনাটি জেনেছি। বিষয়টি নিস্পত্তির জন্য চেষ্টা চালাবো। সমাধান না হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আপনার মন্তব্য লিখুন

আর্কাইভ

September 2023
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930  
আরও পড়ুন