অবশেষে ইউনিয়ন পরিষদের বরাদ্ধ ও জনগণের সহায়তায় শাহ্জাদাপুর-মলাইশ রাস্তা মেরামত
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ৬:৫২ অপরাহ্ণ , ২৮ মে ২০২২, শনিবার , পোষ্ট করা হয়েছে 2 years আগে
অবশেষে ইউনিয়ন পরিষদের
বরাদ্ধ ও জনগণের সহায়তায় শাহ্জাদাপুর-মলাইশ রাস্তা মেরামত
এম এ করিম সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) সংবাদদাতাঃ
অবশেষে ইউনিয়ন পরিষদের বরাদ্ধ ও জনগণের আর্থিক সহায়তায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলার সরাইল উপজেলার শাহজাদাপুর ইউনিয়নের শাহজাদাপুর-মলাইশ রাস্তা মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে।
আজ শনিবার(২৮ মে) দিন ব্যপি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেম্বার ও স্থানীয় এলাকাবাসীর সহায়তায় রাস্তাটি মেরামত কাজ করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, স্বাধীনতার পর থেকে অদ্যাবদি সরাইল উপজেলার শাহজাদাপুর ইউনিয়নের মলাইশ-শাহজাদাপুর রাস্তাটি কাচাঁ রাস্তাই রয়ে গেছে। রাস্তাটি পাকা করণের জন্য স্থানীয় শাহজাদাপুর, নেয়ামতপুর, দাউরিয়া ও মলাইশ গ্রামের হাজার হাজার জনগণ যুগ যুগ ধরে দাবি করে আসলেও অদ্যাবদি রাস্তাটি পাকা করা হয়নি।
উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতে এলাকাবাসীদের অবর্ননীয় কষ্ট ভোগ করতে হচ্ছে। রোগী পরিবহনসহ জরুরী প্রয়োজনে কর্দমাক্ত এই রাস্তা দিয়ে সিএনজি অটোরিক্সা ও অন্যান্য যানবাহনকে যাত্রী সাধারণ বাধ্য হয়ে ধাক্কা দেওয়ার মাধ্যমে কষ্ট করে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে।
এই দৃশ্য দেখে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও এলাকার বিত্তশালী জনগণ সাময়িকভাবে কর্দমাক্ত রাস্তাটি মেরামতের কাজে স্বেচ্ছায় এগিয়ে এসেছেন।
রাস্তার এ মেরামত কাজে ইটের চুরকি (ভাঙ্গা ইট) দিয়ে সহযোগিতা করেছেন শাহজাদাপুর ইসলাম ব্রিক্স এর মালিক হাজী ওসমান। জনগণের স্বার্থে কম টাকায় ইটের চুরকি (ভাঙ্গা ইট) দিয়ে সহযোগীতা করায় ইসলাম ব্রিক্স এর মালিক হাজী ওসমানকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন।
এ ব্যপারে শাহজাদাপুর গ্রামের বাসিন্দা ও এশিয়ান টেলিভিশনের সরাইল প্রতিনিধি আল মামুন খান বলেন, সরাইল উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে অবহেলিত জনগণ আমরা। সব জায়গায় রাস্তার উন্নয়ন হলেও আমাদের শাহজাদাপুর-মলাইশ রাস্তার উন্নয়ন স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরেও হয়নি।
তিনি আরও বলেন, দৈনিক নয়াদিগন্ত পত্রিকাসহ দেশের শীর্ষ স্থানীয় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় একাধিকবার রাস্তাটি নির্মাণের জন্য সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। মহান জাতীয় সংসদেও স্থানীয় সংসদ সদস্যগণ রাস্তাটি নির্মাণের দাবি উত্তাপণ করেছেন। রাস্তাটি নির্মাণের ব্যপারে কেবল আশ্বাস পাওয়া ছাড়া তেমন কোনো কাজ হয়নি।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে বৃষ্টিজনিত কারনে রাস্তাটির বিভিন্ন স্থানে কর্দমাক্ত ও গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। ফলে যানবাহন ও জনগণের চলাচলে মারাত্বক দুর্ভোগ দেখে স্থানীয় সিএনজি মালিক, ড্রাইভার, শ্রমিক ও এলাকাবাসীকে নিয়ে শাহজাদাপুর- মলাইশ রাস্তাটি সাময়িকভাবে যানবাহন চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে।
বীরমুক্তিযুদ্ধা হিরা মিয়া বলেন, ৭১ এর যুদ্ধে অনেক মুক্তিযুদ্ধা এ গ্রামে আশ্রয় নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে যুদ্ধে অংশ গ্রহন করেন। কিন্তু এলাকায় কোন উন্নয়নের ছোঁয়ায় নেই।
স্থানীয় আবদুল হক মেম্বার বলেন আমি তিনবারের নির্বাচিত মেম্বার। অনেক এমপি, মন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছি। এ রাস্তার বিষয়ে কোন কাজ হয়নি। শুধু আশ্বাস পেয়েই আসছি।
স্থানীয় জুয়েল মেম্বার বলেন স্বাধীনতার পর থেকে আমাদের কোন উন্নয়ন হয়নি।
এ ব্যাপারে শাহ্জাদাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আছমা আক্তার বলেন, আমাকে জনগণ ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন। আমার সাধ্য অনুযায়ী যতটুকু চেষ্টা করার আমি করছি। বর্তমানে সাময়িক কাজ করাইতেছি, অদূর ভবিষ্যতে পুনরায় নির্মাণ করার চেষ্টা করব।
এদিকে সাময়িকভাবে মেরামত করে রাস্তাটি দিয়ে যানবাহন চলাচল করার উপযোগী করা হলেও যেকোনো সময় রাস্তাটি ভেঙ্গে ফের যান চলাচলের অনুপযোগী হতে পারে। মলাইশ-শাহজাদাপুর রাস্তাটি দ্রুত স্থায়ীভাবে নির্মাণ করে অবহেলিত এলাকার হাজার হাজার জনগণের দুর্ভোগ লাঘব করতে সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
আপনার মন্তব্য লিখুন